রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫:৩৫ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ,বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ঘোষণা করেছে, করোনাভাইরাসের সাবভ্যারিয়েন্ট জেএন.১ বিশ্বব্যাপী দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। গত নভেম্বরের শুরুতে এতে আক্রান্ত ছিল প্রায় ৩ শতাংশ। কিন্তু এক মাসে এটির বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার হার ২৭ দশমিক ১।
সংস্থাটির বরাত দিয়ে গতকাল বুধবার ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায় করোনার ধরনটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে যেসব দেশে শীতকাল চলছে সেখানে এর বিস্তার বাড়তে পারে।
গত মঙ্গলবার ডব্লিউএইচওর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিশ্বের ৪১টি দেশে এরইমধ্যে এ ধরন শনাক্ত হয়েছে। প্রথম শনাক্ত হয় যুক্তরাষ্ট্রে।
ভারতের এনডিটিভি গতকাল বুধবার এক প্রতিবেদনে জানায়, দেশটিতে বিভিন্নজনের নমুনা পরীক্ষা করে ২১ জনের নতুন ধরনে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে গোয়া রাজ্যে ১৯ এবং একজন করে মহারাষ্ট্র ও কেরালার বাসিন্দা।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে আজ বৃহস্পতিবার বলা হয়েছে, কেরালা রাজ্যে সংক্রমণ বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৯২ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। আগের ২৪ ঘণ্টায় এ সংখ্যা ছিল ১১৫। ১ থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ জন মারা গেছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্দাভিয়া বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, করোনার এই নতুন ধরন সম্পর্কে সতর্ক থাকা ও ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছে।
যুক্তরাজ্যের হেলথ বলেছে, বর্তমানে একটি পরীক্ষাগারে যতগুলো করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসছে, তার প্রায় ৭ শতাংশের জন্য জেএন.১ দায়ী। সংস্থাটি আরও বলেছে, এ ধরন এবং অন্য ধরনগুলোর ব্যাপারে নতুন নতুন কী তথ্য পাওয়া যায়, সেদিকে নজর রাখছে তারা।
ধারণা করা হচ্ছে, অমিক্রনের আরেক উপধরন বিএ.২.৮৬ ধরনের তুলনায় জেএন.১-এর স্পাইক প্রোটিনের অতিরিক্ত পরিবর্তনের কারণে সব অঞ্চলে জেএন.১ দ্রুত ছড়াচ্ছে। বিএ.২.৮৬ ধরন থেকেই জেএন.১-এর উৎপত্তি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ঝুঁকিসংক্রান্ত এক পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, বিশেষ করে, যেসব দেশে শীত মৌসুম শুরু হচ্ছে, সেখানে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত অন্য সংক্রমণগুলোর পাশাপাশি এ ধরনের কারণে সারস-কভ-২ (করোনাভাইরাস) এর প্রকোপ বেড়ে যেতে পারে।
ডব্লিউএইচও বলছে, টিকার কারণে যে ইমিউনিটি তৈরি হয়, তা দিয়ে জেএন.১ থেকে কতটুকু সুরক্ষা মিলবে, সে ব্যাপারে খুব বেশি প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। তবে আগের ধরনগুলোর চেয়ে এ ধরনে সংক্রমণের কারণে মানুষ অপেক্ষাকৃত বেশি অসুস্থ হচ্ছে বলে খবর জানা যায়নি।
সংস্থাটি মনে করছে, স্বাস্থ্যের ওপর এ ধরনের প্রভাব নির্ণয়ের জন্য আরও বেশি গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। সংক্রমণ ও মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কিছু পরামর্শ দিয়েছে। সেগুলো হলো—
জনাকীর্ণ ও বদ্ধ জায়গায় মাস্ক পরতে হবে।
কাশি বা হাঁচির সময় নাক ও মুখ ঢেকে রাখতে হবে।
কোভিড এবং টিকার নতুন নতুন তথ্য সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজখবর রাখতে হবে।
বিশেষ করে, যাঁরা সংক্রমণের ঝুঁকিতে আছেন।
অসুস্থ হলে বাড়িতে থাকুন।
লক্ষণ দেখা দিলে রোগ শনাক্তের পরীক্ষা করতে হবে।